বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৮:০৯ অপরাহ্ন

শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় শিক্ষককে লঘু দন্ড

শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় শিক্ষককে লঘু দন্ড

নিউজ ডেস্ক :

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির ঘটনা প্রমানিত হওয়ার পরও মো: জিয়াউর রহমান জিয়া নামে এক সহকারী শিক্ষককে তিরস্কার দন্ড- প্রদান করে ক্ষমা করা হয়েছে। গত ১৪ নভেম্বর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দ- প্রাপ্ত ওই শিক্ষক থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

 

সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার পূর্বক তিরস্কার দন্ড- প্রদান পত্রটি বৃহষ্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) পাওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। পত্রানুযায়ী জানাযায়, এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির চুড়ান্ত সভায় অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমান অভিযোগ সর্ম্পকে ভূল স্বীকার ও শেষবারের মত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরবর্তিতে তিনি অনুরুপ অপরাধ বা প্রতিষ্ঠান বিরোধী বা চাকুরীবিধি পরিপন্থী কোন কার্যকলাপ না করার প্রতিশ্রুতি দেন। এদিকে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিরস্কার দন্ড- প্রদান করে ক্ষমা প্রদান করার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, যৌন হয়রানীর অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হলেও অদৃশ্য কারণে তিনি বার বার পার পেয়ে যাচ্ছেন। এতে বিদ্যালয়ে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের মাঝে এক ধরণের ভীতি কাজ করছে। আব্দুস সালাম নামে এক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, যৌন হয়রানীর মত স্পর্শকাতর একটি অপরাধকে এ ভাবে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হচ্ছে যা আদৌ কাম্য নয়। এ যেন গুরু পাপে লঘু শাস্তি। এর দায় বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটিও এড়াতে পারেন না। চলতি বছরের গত ২২ জুন যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করেন।

অভিযোগে জানা যায়, যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রীটি প্রাইভেট পড়ত শিক্ষক জিয়াউর রহমানের কাছে। একদিন পড়ানোর টেবিল থেকে দূরে ডেকে নিয়ে তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়ার চেষ্টার পাশাপাশি কুপ্রস্তাব দেন। শিক্ষকের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত আচরণে মুষড়ে পড়ে ছাত্রীটি। সে শিক্ষকের আচরণ সম্বন্ধে বাবা-মাকে জানায়। ছাত্রীর বাবার অভিযোগের পরিপেক্ষিতে তৎকালিন ইউএনও মিনহাজুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে কমিটি ওই শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করে সাময়িক বরখাস্ত করে।

২০১৯ সালেও এক শিক্ষার্থীকে শীলতাহানির মামলায় শিক্ষক জিয়াউর রহমান পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস করেন। এর তিন মাস পর জামিনে বেরিয়ে ফের ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মো: জিয়াউর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি সমাধান হয়েছে বলে জানান।

 

এ বিষয়ে থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: তৈয়ব আলী বলেন, সদ্য যোগদানকৃত ইউএনও সবুজ কুমার বসাক ও এ্যাসিলেন্ট নঈম উদ্দীন স্যারের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত শিক্ষককে তিরস্কার দন্ড প্রদান করে তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

 

ইতোমধ্যে তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। তবে চিলমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক শিক্ষকের তিরস্কার দন্ডের বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি জানান, সদ্য যোগদান করায় বিষয়টি সর্ম্পকে আমি অবগত ছিলাম না।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024 Rangpurtimes24.Com
Developed BY Rafi IT