জামান মৃধা, ডিমলা (নীলফামারী) সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি’র পৈশাচিক নৃশংস হত্যাকাণ্ডসহ সকল সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় কর্মরত সকল ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়াকর্মীবৃন্দ।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে এগারোটার সময় উপজেলার স্মৃতি অম্লানে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। আর এতে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা ও সুশীল সমাজের লোকজনসহ সাধারণ সচেতন মহল।
মানববন্ধনে, দৈনিক করোতোয়া পত্রিকার ডিমলা প্রতিনিধি ময়েন কবিরের সভাপতিত্বে ও যুগের আলো পত্রিকার মোহাম্মদ আলী সানুর সঞ্চালনায় দৈনিক খোলা কাগজের আশিক লেমন, দৈনিক মানবকণ্ঠের বাদশা সেকেন্দার ভুট্টু, দৈনিক নয়া দিগন্তের রেজোয়ান ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা দ্রুততম সময়ে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিয়ে বিচার ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে সব সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের ও নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘসূত্রিতায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপস্থিত বক্তাগণ। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৪ আগস্ট পরবর্তী দিন ধার্য করেন। এ দিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও দিন ধার্য ছিল। তবে নির্ধারিত দিনে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব। তাই এ নিয়ে মামলাটিতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ১০৯ বারের মতো পেছালো।
মামলার বিবরণী তথ্যসূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারী রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন।
প্রথম পর্যায়ে মামলাটির তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত ভারগ্রহণ করেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক রবিউল আলম। এর দুই মাস পর তৃতীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব)। সেই থেকে গত প্রায় ১২ বছরে ১০৯ বার সময় নিয়েও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।