বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ অপরাহ্ন

শারমিনের পাশে দাঁড়ালেন ডিমলার ইউএনও

শারমিনের পাশে দাঁড়ালেন ডিমলার ইউএনও

জামান মৃধা, ডিমলা (নীলফামারী)

মেধাবী শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার মনির বাবা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। মা থেকেও নেই। ছোট বয়স থেকেই চাচার বাড়িতে আশ্রিত। খুপড়ি ঘরে দাদীর সঙ্গে তাদের বসবাস। বয়সের ভারে সেও নুয়ে পড়ছে। নিজে প্রাইভেট পরিয়ে সেই টাকায় নিজের এবং বৃদ্ধ দাদীর যৎসামান্য খরচ জোগাড় করেছে।

 

 

এমন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েও কলেজে ভর্তি নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় থাকা শারমিন আক্তার মনির পাশে দাঁড়িয়েছে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উম্মে সালমা।

 

সোমবার (২০ মে) দুপুর তিনটায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তার কার্যালয়ে শারমিন আক্তার মনিকে ডেকে এনে তার হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন। এবং ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষার পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, জিপিএ-৫ পেয়েও পড়াশোনা অনিশ্চিত শারমিনের খবরটি জানতে পেরে আজ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেই। এরপরও পড়াশোনা চালাতে যা যা করণীয় আমাদের জানালে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া শারমিন আক্তার যে কলেজে ভর্তি হবে সেখানেও যেন তাকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় সে ব্যাপারেও আমরা তাকে সহযোগিতা করবো। এছাড়া ইউএন তার ছাত্র জীবনের কঠিন বাস্তবতার গল্প বলে অনুপ্রেরণা যোগায় মেধাবী ছাত্রী শারমিন আক্তারকে।

 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেজবাহুর রহমান, গয়াবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ফরহাদ হোসেন ফিলিপ, গয়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শরিফ ইবনে ফয়সাল মুন, নয়া দিগন্তের ডিমলা প্রতিনিধি রেজুয়ান ইসলাম, ডেইলি মেসেঞ্জারের জেলা প্রতিনিধি রিপন ইসলাম শেখ ও দৈনিক কালবেলার ডিমলা প্রতিনিধি কামরুজ্জামান মৃধা প্রমুখ।

 

এ নিয়ে গত ১৫ই মে বুধবার একটি পত্রিকায় ”জিপিএ-৫ পেয়েও পড়াশোনা অনিশ্চিত শারমিনের” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর প্রতিবেদনটি নজরে এলে তার কলেজে ভর্তির জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।

 

শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার মনি জানায়, আমার বাবা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। মা থেকেও নেই। সেই ছোট বয়স থেকেই চাচার বাড়িতে থাকছি। নিজে কোনদিন কোচিং অথবা প্রাইভেট পড়িনি আবার নিজের লেখাপড়া চালাতে অন্যের বাচ্চাদের প্রাইভেট পরিয়েছি। পাঠ্য বইয়ের অভাবে সিনিয়র ভাই বোনদের বই এনে পড়েছি। প্রতিনিয়ত অভাব ও দারিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করছি। শত প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও পড়াশোনা ছাড়িনি লেখাপড়া চালিয়ে গেছি। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম।

 

 

আজকে ইউএনও স্যারের এ সহযোগিতার জন্য আমি অনেক খুশি, স্যারের প্রতি চির কৃতজ্ঞ আমি। মন দিয়ে পড়াশোনা করে সামনে আরো ভালো রেজাল্ট করবো ইনশাল্লাহ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024 Rangpurtimes24.Com
Developed BY Rafi IT