জামান মৃধা, ডিমলা (নীলফামারী):
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাবুরহাট এলাকায় ড্রেনের নির্মাণ কাজে নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহার ও রড কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ড্রেনে বৃষ্টির পানি জমে থাকা অবস্থায় করা হচ্ছে ঢালাইয়ের কাজ। এতে ঢালাইয়ের স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
স্থানীয় এলাকা বাসির অভিযোগ, উপজেলা প্রকৌশল অফিসের যোগসাজশে ঠিকাদার নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম করছে। এ কাজের গুণগত মান ও স্থায়ীত্ব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের অধীনে উপজেলার বাবুরহাট বাজারের বিজয় চত্বর থেকে ডিমলা-ডোমার সড়কের পাশে ৫৩০ মিটার ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে ১ কোটি ৪ লাখ ৫৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেবিসি ট্রেডার্স কাজটি পায়। তবে কাজটি সম্পন্ন করছেন সাব-ঠিকাদার নুর আলম।
সরজমিনে দেখা যায়, নিম্নমানের নূড়ীপাথর-বালু ও জং ধরা রড ব্যবহার করা হয়েছে। দেয়ালে ৭ ইঞ্চি দূরত্বের পরিবর্তে ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি দূরত্বে রড বাঁধা হয়েছে। পাথরের সঙ্গে আবর্জনাযুক্ত মাটি মিশিয়ে বৃষ্টির পানি, ময়লা আর কাঁদা মাটিতেই চলছে ড্রেন ঢালাইয়ের কাজ।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ঢালাইয়ের সময় দেখভালের দায়িত্বে থাকা তত্ত্বাবধায়ক না থাকায় নিম্নমানের পাথর ও বালু ব্যবহার করে ঢালাইয়ে সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়া হচ্ছে। ড্রেনের বেড সঠিক মাত্রায় কমপ্যাক্ট না করেই ঢালাই করা হয়েছে। ঢালাইয়ের পুরুত্ব ১৫০ মিলিমিটারের জায়গায় ১২০ মিলিমিটার করা হয়েছে। এ ছাড়া নকশা অনুযায়ী রডের পরিমাণও কম দেওয়া হয়েছে। যে কারণে এ কাজটির স্থায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক নির্মাণ শ্রমিক বলেন, কাঁদা-পানির মধ্যে ঢালাই দিলে টেকসই হবে না। শুধুই হবে ফাঁকি ও অর্থের অপচয়।যেভাবে কাজ হচ্ছে ড্রেনটি অল্পদিনেই ভেঙে যাবে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে কাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, নির্মাণ কাজে কোন অনিয়ম হচ্ছে না। কাজে অনিয়ম আছে কি না সরজমিনে দেখতে কাজের জায়গায় আসতে বললে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
সাব-ঠিকাদার নুর আলম বলেন, দরপত্র অনুযায়ী ড্রেনের নির্মাণ কাজ চলছে। অফিস কর্তৃপক্ষ সবকিছু দেখছেন।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শফিউল আলম বলেন, নির্মাণ কাজে অনিয়মের সুযোগ নেই। কাজ পরিদর্শন করে অনিয়ম পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।