শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৫:০১ পূর্বাহ্ন

ডিমলায় কৃত্রিম সংকটে সারের দাম বৃদ্ধি, বিপাকে কৃষকেরা

ডিমলায় কৃত্রিম সংকটে সারের দাম বৃদ্ধি, বিপাকে কৃষকেরা

জামান মৃধা, ডিমলা (নীলফামারী)

চলতি রবি মৌসুমের শুরুতে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে নীলফামারীর ডিমলায় ডিলার, সাব-ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। বিশেষ করে ইউরিয়া, ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ও মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। কৃষকদের অভিযোগ ডিলারেরা কৃষকদের কাছে সার বিক্রি না করে অতিরিক্ত দামে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন। পরে সেই সার খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে কৃষকদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এর পরও চাহিদামতো সার পাচ্ছেন না তারা। যদিও কৃষি অধিদপ্তর সারের কোনো সংকট নেই বলে দাবি করছেন।

 

গতকাল শনিবার সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতারা দোকানে মূল্য তালিকা টাঙ্গিয়ে রাখলেও সে অনুযায়ী বিক্রি করছেন না তারা। প্রতি বস্তা সার সরকারি মূল্যের চেয়ে প্রকারান্তরে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করছেন। কৃষক সার কিনতে গেলে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সংকটের কথা বলেন। তবে দাম বেশি দিলেই সার পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া বিক্রেতারা কৃষকদের কোনো সঠিক বিক্রয় রসিদ দেন না। আর যেটা কৃষকদের দেন তার চেয়ে বেশি দাম দিয়ে সার কিনতে হয়। ডিলার/খুচরা বিক্রেতাদের কাছে তারা  এভাবে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সরকার অনুমোদিত এই সকল ডিলার/সাব-ডিলাররা সরকারি নির্দেশনা না মানায় দেখা দিয়েছে সারের কৃত্রিম সংকট। আর এতে বাড়বে কৃষি উৎপাদন খরচ।

 

উপজেলার টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়নের চরখরিবাড়ি গ্রামের প্রান্তিক কৃষক জুলহাস মিয়া বলেন, বর্তমানে আলু, গম ও ভুট্টার চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এ সময় টিএসপি, বিওপি ও এমওপি সার  সংকট দেখা দিয়েছে। দামের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা দিলেই সার মিলছে। ডিলারের কাছে গেলে বলে সার নেই।

খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশপুকুর  গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, ডিলাররা রাতারাতি সার নিয়ে খুচরা বিক্রেতাদের দিয়ে দিচ্ছেন। এজন্য আমরা সার পাচ্ছি না। উপজেলা প্রশাসন যদি অভিযান চালায় তাহলে আর সারের কৃত্রিম সংকট থাকবে না।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন খুচরা সার বিক্রেতা জানান, গত দুই মাস আগে থেকেই ইঙ্গিত হিসেবে সারের দাম টুকটাক বাড়ানো হচ্ছিল। মূলত তখন থেকেই গুদাম ঘরে সার মজুত শুরু হয়েছে। এখন সংকট দেখিয়ে আমাদের থেকে দাম বেশি নিচ্ছেন ডিলাররা। বলছেন সার নেই! বাড়তি টাকা দিলে ঠিকই চাহিদামতো সার মিলছে। এসব ক্রয়-বিক্রয়ে কোন বিক্রয় রশিদ দেওয়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে ডিলারদের দাবি, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ার কারণে বাজারে সারের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। এছাড়া কৃষকরা সার সংকটের গুজবে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত সার কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ কারণে গুজবের মাত্রা আরো বেশি যোগ হয়েছে।

ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আল বান্না বলেন, এখন সারের কোন ঘাটতি নেই। এর পরও কোথাও কোথাও সংকটের অজুহাতে বেশি দামে সার বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল মিয়া বলেন, বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। কৃত্রিম সার সংকটের কোন সুযোগ নেই।

 

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024 Rangpurtimes24.Com
Developed BY Rafi IT