শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন

প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফর, তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে আশায় বুক বাঁধছে তিস্তাপাড়ের মানুষ

প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফর, তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে আশায় বুক বাঁধছে তিস্তাপাড়ের মানুষ

রংপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক :

চার বছর পর রংপুরে আসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২ আগস্ট রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে আশায় বুক বাঁধছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ।

তিস্তাপাড়ের সাধারণ মানুষ এবং তিস্তা নিয়ে যারা আন্দোলন করে আসছেন, তাদের আশা প্রধানমন্ত্রী রংপুরের জনসভায় বহু আকাঙ্ক্ষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো সুখবর নিশ্চয়ই দেবেন। কারণ, পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় তিস্তা এখন উত্তরের মানুষের দুঃখ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছর বন্যা এবং খরায় নদীপাড়ের মানুষের দীর্ঘশ্বাস দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। তিস্তার দুই পাড়ের লাখ লাখ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করতে পারে একমাত্র মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে তিস্তাপাড়ের মানুষের পানির জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না।

 

পীরগাছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শরিফুজ্জামান বুলু বলেন, ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী রংপুরের তারাগঞ্জ ও পীরগঞ্জ উপজেলায় দুটি জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন। প্রায় পাঁচ বছর পর তিনি আবারও রংপুরে আসছেন। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী তিস্তা নদী নিয়ে সুখবর দেবেন এটিই আমাদের প্রত্যাশা।

প্রধানমন্ত্রীর আগমনের খবর পৌঁছে গেছে তিস্তার চরাঞ্চলেও। সাম্প্রতিক বন্যার পানি নেমে গেলেও দুর্ভোগে থাকা পরিবারগুলো এতে আশায় বুক বেঁধেছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলার নদীবেষ্টিত লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হাদি বলেন, বর্ষা-খরা দুই মৌসুমেই চরম দুর্ভোগের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হয় নদীপাড়ের মানুষকে। দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রীর রংপুরে আগমনের খবরে আমরা আশায় বুক বেঁধেছি। এবার হয়তো বঙ্গবন্ধুকন্যা তিস্তা সমস্যা সমাধানের ঘোষণা দেবেন।

তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী  বলেন, ‘ভারত আন্তর্জাতিক নদী আইন লঙ্ঘন করে
একতরফাভাবে তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানি প্রত্যাহার করছে। ভারত তিস্তার উজানে গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে পানি সরিয়ে নেওয়ার কারণে আমাদের উত্তরবঙ্গ আজ মরুভূমি হওয়ার পথে। বর্তমানে আবার ভারত নতুন দুটি খাল খনন করে তিস্তার পানি প্রত্যাহারের পাঁয়তারা করছে। তাদের পানি আগ্রাসনের
প্রকৃতি-প্রতিবেশ বিপন্ন।

তিনি বলেন, গত ১৩ জুলাই ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা কবির বিন আনোয়ারের সঙ্গে তার কার্যালয়ে আমরা দেখা করেছিলাম। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তিস্তাপাড়ের মানুষের দুঃখ লাঘবে যত দ্রুত সম্ভব তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কাজের উদ্বোধন করবেন। আমাদের আশা, প্রধানমন্ত্রী রংপুরের জনসভায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি পূরণ করবেন।

তিস্তা মহাপরিকল্পনায় রয়েছে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্ট থেকে ব্রহ্মপুত্রের সংযোগস্থল পর্যন্ত নদী খনন, নদীর দুই তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, ড্রেজিং করে যে মাটি উত্তোলন করা হবে তা নদীর দুপাশে ভরাট করে ইপিজেড নির্মাণ, সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ইত্যাদি।

এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করার কথা রয়েছে চীনের। তবে স্থানীয়দের দাবি, কারও কাছে হাত পেতে নয়, বরং পদ্মা সেতুর মতো তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিজস্ব অর্থায়নে করা হোক।

সমাজ পরিবর্তন ও উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি সাব্বির আরিফ মোস্তফা  বলেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি। আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বৈদেশিক সহযোগিতায় যদি এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হয় তাহলে পদ্মা সেতুর মতো নিজস্ব অর্থায়নে হলেও এর বাস্তবায়ন হোক এটা আমরা চাই।’

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল কাশেম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রংপুরের দায়িত্ব নিজে কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তার কাছে কিছু চাওয়ার আগেই তিনি দিয়ে দেন। এবারও তিনি রংপুরের উন্নয়নে কিছু পরিকল্পনা তুলে ধরবেন এটা বিশ্বাস করি।’

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024 Rangpurtimes24.Com
Developed BY Rafi IT