রংপুর টাইমস:
উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদ সীমার সর্বোচ্চ ১৯সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নদী পাড়ে বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
পানি বৃদ্ধি ফলে নিম্ন অঞ্চলের রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে পানিতে তলিয়ে গেছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সকাল ৯ টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)।
এর আগে শনিবার (০৮ জুলাই) তিস্তার পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, সকাল ৬টায় বিপদ সীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্ষার মৌসুমী এই প্রথম সর্বোচ্চ পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় আবারও লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় ভোগান্তিতে পরেছে তিস্তাপাড়ের মানুষ।
বর্ষা মৌসুমে জুন মাসের শুরু থেকে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে আছে। প্রথম দফা স্বল্প মাত্রার বন্যার পর পানির গতি অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও বুধবার দিবাগত রাত থেকে বাড়তে শুরু করে বিপৎসীমা অতিক্রম করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর,বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
গড্ডিমারি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, রাত থেকে তিস্তার পানি হু হু করে বৃদ্ধিতে তিস্তা পারে মানুষের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে চলাচলের খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ছে।
হাতীবান্ধার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন,অত্র ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ডে তিস্তা নদীর তীরে অবস্থিত। প্রথম দফায় বন্যার পর দ্বিতীয়বার আবারো তিস্তা চরের ঘরবাড়িতে গতরাত থেকে পানি প্রবেশ করছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে তিস্তা চরের মানুষ। তিস্তা চরের মানুষের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বিপদ সিমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে এতে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলাযর তিস্তার চরে বাসিন্দার কে সতর্ক করা হয়েছে।