বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ অপরাহ্ন

১৩ দিন অনশনের পর  ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করল প্রেমিকা

১৩ দিন অনশনের পর  ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করল প্রেমিকা

রংপুর টাইমস:
লালমনিরহাট আদিতমারীতে এস এস সি পরিক্ষার্থী নাসরীন সুলতানা (১৭) এক প্রেমিকা মিজানুর রহমান নামের প্রেমিকের বাড়ীতে বিয়ের দাবীতে ১৩ দিন অনশনে থাকার পর প্রেমিকাকে অতপর পুলিশ উদ্ধার করলেন।
প্রেমিক মিজান উপজেলার বড় কমলাবাড়ি গ্রামের শাখা নেওয়াজের ছেলে। আর প্রেমিকা স্কুল ছাত্রী একই এলাকার নাজিম উদ্দিনের মেয়ে এবং কিসামত চড়িতাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক শাখার চলতি এসএসসি পরীক্ষার্থী।
অবশেষে কোন সুরাহা না পেয়ে প্রেমিকার মা হাফিজা খাতুন বাদী প্রেমিক মিজানুর রহমান তার বাবা শাখা নেওয়াজ (৫২),মা মার্জিনা বেগম (৪৮),ছোট ভাই মনসুর আলী (২৫) ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন (আলাল)সহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আদিতমারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশ মঙ্গলবার (২ মে) সকালে নাসরীনকে প্রেমিক মিজানের বাড়ী থেকে উদ্ধার করে মেডিকেল পরিক্ষা ও ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট জবানবন্দীর জন্য লালমনিরহাটে প্রেরন করে।
পরিক্ষা দেয়া হলো না বিয়ের দাবিতে ১২ দিনে অনশনে থাকা নাসরীনের শিরোনামে ১ মে একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অবশেষে পুলিশ আমলে নিয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমলে নিয়ে মামলা নথিভূক্ত করে নাসরীনকে উদ্ধার করে মেডিকেলে পরিক্ষা ম্যাজিস্ট্রেটের জবানবন্দীর জন্য লালমনিরহাটে প্রেরন করে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৫ বছর আগে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে প্রেমিক মিজানুর রহমান মিজানের। এরই মধ্যে পাশ্ববর্তি আদিতমারী কালীস্থান এলাকার লোকমান আলীর ছেলে আল আমিনের সাথে নাসরীনের বিয়ে দেয় পরিবার। বিয়ে হলেও সম্পর্ক অটুট রাখে প্রেমিক মিজান। বিয়ের এক মাসের মধ্যে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে আসে নাসরীন। পড়ালেখার পাশাপাশি নিয়মিত যোগাযোগ রাখে প্রেমিক মিজানের সাথে।
স্কুল ছাত্রী নাসরীন স্বামীর বাড়ি না গেলে ৩ বছর আগে স্বামী আল আমিন অন্যত্র বিয়ে করে ঘর সংসার শুরু করে। তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে সম্পর্ক চালিয়ে যায় প্রেমিক মিজান। প্রেমের সম্পর্ক থেকে দৈহিক সম্পর্কেও জড়ায় তারা। প্রেমিক মিজান ফাঁকি দিয়ে গত ৪ মাস ধরে গোপনে সাবিনা আক্তার নামে অপর এক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। গত ১৬ এপ্রিল বিয়ের দাবিতে মিজানের বাড়িতে অনশন শুরু করে দ্বিতীয় প্রেমিকা সাবিনা আক্তার।প্রেমিক মিজানের অনুরোধে ওই বাড়িতে গিয়ে দ্বিতীয় প্রেমিকাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন ।
এরপর প্রেমিক মিজান ও তার পরিবারের কথামত প্রথম স্বামী আল আমিনকে গত ১৮ এপ্রিল তালাক দেন নাসরীন। পরদিন রাতেই মোটা অংকে যৌতুকে দ্বিতীয় প্রেমিকা সাবিনাকে বিয়ে করেন প্রেমিক মিজান। খবর শুনে ওই দিন মিজানের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করে প্রথম প্রমিকা । তাকে দেখে নতুন বউসহ মিজানকে বাড়ি থেকে পালিয়ে দেয় তার পরিবার। অনশনের ১৩ দিন হলেও বিয়ের দাবি ছাড়ে নি ১ম প্রেমিকা। প্রেমিক মিজানের বাড়ির উঠানেই রাত কাটছে তার। গত রোববার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হলে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিলেও তাকে পরীক্ষা দিতে যেতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ নাসরীনের। গত রোববার সকালে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও প্রেমিক মিজানুর রহমান মিজানের বাড়িতে ১২তম দিনে অনশনে থেকে যান স্কুল ছাত্রী।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোজাম্মেল হক ঘটনার জানান, মামলার প্রেক্ষিতে মেয়েকে উদ্ধার করে মেডিকেল পরিক্ষা ও ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট জবানবন্দীর জন্য লালমনিরহাটে প্রেরন করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024 Rangpurtimes24.Com
Developed BY Rafi IT