দিপক রায়, তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি :
নৌকায় ভোট না দিলে বিধাব, বয়স্ক, মাতৃত্বকালীন ও প্রতিবন্ধী ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন রংপুর-২ (তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এ.কে.এম আহসানুল হক চৌধুরী ওরফে ডিউক চৌধুরীর সহধর্মীনি সুরভী চৌধুরী।
সাধারণ ভোটারদেরকে জড়ো করে স্বামীর পক্ষে ভোট চেয়ে হ্যান্ড মাইকে তার এধরনের হুমকি দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর রংপুর-২ আসন জুরে শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
ভিডিওটির সূত্র ধরে জানা যায়, ২৯ ডিসেম্বর আসনটির তারাগঞ্জ উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নে কিছু নারী ও পুরুষ ভোটারদের জড়ো করে স্বামীর প্রাপ্ত প্রতীক নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন স্ত্রী সুরভী চৌধুরী। ভিডিওটিতে দেখা যায়, এক যুবক হ্যান্ড মাইকটি ধরে থাকা অবস্থায় সুরভী চৌধুরী দাড়িয়ে সাধারণ ভোটারদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখছেন। এসময় তিনি তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলছেন, “আপনারা আপনাদের মূল্যবান ভোটটা যেখানে সেখানে নষ্ট করবেন না। দাদারা, দিদিরা, মায়েরা, প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন আগে তারাগঞ্জে এসে কি বলে গেছেন ? আপনাদের হাঁতে তাকে (ডিউক চৌধুরী) উঠায় দিয়ে গেছেন না ? সেসময় তিনি কি বলেছেন ? বলেছেন এটি আমার ছেলে। আমার স্বামী যদি প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হয় তাহলে তো আমি প্রধানমন্ত্রীর ছেলের বউ। আমার কত গর্ব আমি প্রধানমন্ত্রীর ছেলের বউ, আপনাদেরও গর্ব এটি। আপনারা ৭ জানুয়ারি সকাল সকাল ভোট সেন্টারে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোটটা দেবেন। আপনাদের বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়েছে। আপনারা আবারও নৌকায় ভোট না দিলে এগুলো কিন্তু বন্ধ হয়ে যাবে।”
ভিডিওটি ভাইরাল হলে তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জের রাজনৈতিকসহ সচেতন সমাজের মাঝে বক্তব্যটি নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এদিকে এই আসনে আওয়ামীলীগ সমর্থিক নৌকা প্রতীকের এই প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না দুই উপজেলার অধিকাংশ আওয়ামীলীগের নেতাদের। পরিচিত ও জনপ্রিয় নেতাদের নৌকার পক্ষে প্রচারণায় দেখতে না পাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে নৌকার এ প্রার্থীর উপর। এরই মধ্যে ৩০ ডিসেম্বর নৌকা প্রতীকের তারাগঞ্জ উপজেলার কর্মী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীকের এক কর্মীকে মারধরের ঘটনায় আলোড়ণ সৃষ্টি হয়েছে দুই উপজেলা জুরে।
মারধরের শিকার উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের ছেনার আলী জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলেও জানা গেছে।