জেলা প্রতিনিধি,লালমনিরহাট।
ভারী বর্ষণ ও উজানের ভারী ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে সকাল থেকে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চল ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অন্তত পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
ডুবে গেছে স্কুল মাঠ, রাস্তাঘাট। পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার সংকট দেখা দিয়েছে।
সোমবার (১৯ জুন) বিকেল ৩টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরে সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সে.মি. নিচে রেকর্ড করা হয়েছে।
তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)।
এর আগে রোববার (১৮ জুন) সন্ধায় তিস্তার ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৩ সে. মি নিচে রেকর্ড করা হয়।
ডালিয়া পয়েন্টের ভাটি এলাকায় নতুন করে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী,দোয়ানী,ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ,
সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া,হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা,পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ,রাজপুর,গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এতে তীরবর্তী এলাকায় রাস্তা ডুবে যাওয়ায় চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। বিপাকে পড়েছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও গরু-ছাগল ও পোষাপ্রাণী নিয়েও ভোগান্তিতে পড়েছেন পানিবন্দী লোকজন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শুকনো খাবার ও স্যানিটেশন সমস্যায় পড়বে হাজারও মানুষ।
আদিতমারী উপজেলা গোবর্ধন হায়দারিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, কাল থেকে পানি বাড়তেছে। স্কুলে যাওয়ার রাস্তায় পানি উঠেছে। তাই পানিতে ভিজে স্কুলে যাচ্ছি।
হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, উজানের ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহি অফিসার মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে । এখনও কোন সরকারি বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, কিছুটা পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, তা আবারও কমে গেছে। আমরা সবসময় খোঁজখবর রাখছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় যাবতীয় প্রস্তুতি রয়েছে।