শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন

একসঙ্গে মৃত্যুর ইচ্ছা পূরণ হলো দম্পতির

একসঙ্গে মৃত্যুর ইচ্ছা পূরণ হলো দম্পতির

রংপুর টাইমস :

প্রায় পাঁচ যুগের দাম্পত্য জীবন। এ দীর্ঘ সময়ের পথচলায় কিছু মান-অভিমান থাকলেও ছিল একে অপরের প্রতি অগাধ ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার টানে সবসময় কামনা করতেন একসঙ্গে যেন মৃত্যু হয়, কবরও যেন হয় পাশাপাশি। তাদের সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। একই দিনে পৃথিবী ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন ওই দম্পতি।

বলছিলাম রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের ইন্দিরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজগার আলী (৮০) ও তহিদা খাতুন (৭২) দম্পতির কথা। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ভোরে আজগার আলী ও রাত ৮টার দিকে তার স্ত্রী তহিদা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে।

 

আজগার আলীর ভাতিজা নুরু মিয়া জানান, রোজা শেষে বুধবার (১৩ মার্চ) রাতের খাবার একসঙ্গে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন ওই দম্পতি। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন তহিদা খাতুন। এসময় ডাকাডাকি করেও স্বামীর সাড়া পাননি। তার কান্না শুনে বাড়ির অন্য লোকজন ছুটে আসেন। তখন তারা বুঝতে পারেন আজগর আলী মারা গেছেন।

স্বজনরা জানিয়েছেন, আজগার আলী পেশায় একজন কৃষক ছিলেন। তিনি কিছুদিন ধরে অ্যাজমা রোগে ভুগলেও তার স্ত্রী তহিদা খাতুনের তেমন কোনো রোগ ছিল না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শামসুল হক জানান, আজগার আলীর মৃত্যুর পর থেকে শোকার্ত ছিলেন স্ত্রী তহিদা খাতুন। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর জানাজা শেষে বাড়ির পাশেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আজগার আলীকে। জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণকারী স্বজনদের অনেকটা শক্ত মনে বিদায় দেন তহিদা খাতুন। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়িতে হঠাৎ মাথা ঘুরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তাৎক্ষণিক মারা যান তহিদাও। পরে মধ্যরাতে জানাজা শেষে স্বামীর কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।

ওই দম্পতির সন্তান লাভলু মিয়া বলেন, ‘আমার বাবা-মায়ের মধ্যে যে ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব ছিল, তা এ যুগের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দেখতে পাই না। জীবদ্দশায় বাবা-মা সবসময় কামনা করতেন একসঙ্গে মৃত্যুবরণের। আল্লাহ তাদের সেই মনোবাসনা পূর্ণ করেছেন।’

ওই ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে থাকা (বিট কর্মকর্তা) বদরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ আলম বলেন, ঘটনাটি বিস্ময়কর। স্বামী-স্ত্রীর একই দিনে স্বাভাবিক মৃত্যু তেমন দেখা যায় না।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024 Rangpurtimes24.Com
Developed BY Rafi IT