ঝড়-বাদলের মৌসুমে রান্নাঘরে স্যাঁতসেঁতে ভাব দেখা যায়। কিছু বিষয় মেনে বৃষ্টির মৌসুমেও রান্নাঘর সুন্দর রাখা যায়। পরামর্শ দিয়েছেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্টারপ্রেনারশিপ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসনিয়া
ঈদ উপলক্ষে বাড়তি রান্নার চাপে এলোমেলো হয়ে পড়ে রান্নাঘর। এখন আষাঢ় মাস। বৃষ্টির মৌসুম। টানা বৃষ্টির কারণেও রান্নাঘরে স্যাঁতসেঁতে একটা ভাব দেখা দিতে পারে।
নানা রকম পোকামাকড় ও ছত্রাকের উপদ্রব দেখা দেয়। এ জন্য রান্নাঘরের প্রতি এখন আলাদা মনোযোগ দিতে হবে।
ঈদে বাড়তি মানুষের থালাবাটি-প্লেট ধোয়া, রান্নাবান্না, কোটাবাছা সব যেহেতু একই ঘরে, সেহেতু রান্নাঘরের সিংকের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। সেখানে বাসন, পানি জমে থাকাও অস্বাভাবিক নয়।
পাইপ বা পানি নির্গমনের পথ বন্ধ হয়ে রান্নাঘরে নোংরা পানি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ জন্য বারবার ভালো করে সিংকের পাইপ পরিষ্কার করে নিতে হবে। সিংকে আটকে যায় এমন কিছু এতে ফেলা যাবে না। মূলত পানির কাজ বেশি হয় বলেই রান্নাঘরে স্যাঁতসেঁতে ভাব বেশি হয়।
সিংকের পানিপ্রবাহের পথে সপ্তাহে একবার কুসুম গরম পানি ঢেলে দিন। এ সময় লম্বা ও শক্ত কাঠি দিয়ে ছিদ্রের ভেতরে ধাক্কা দিলে জমে থাকা ময়লা বের হয়ে আসবে। রান্নাঘর সব সময় আবদ্ধ করে রাখবেন না। বৃষ্টির ছাঁট রুখতে জানালা বন্ধ রাখতে পারেন। আবার বৃষ্টি শেষে খুলে দিন।
রান্নাঘরে আলো ও বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এতে স্যাঁতসেঁতে ভাব কমে আসবে।
রান্নাঘরে জিনিসপত্র রেখে পুরো ঘরটা ভরাট করে ফেলবেন না। অদরকারি জিনিসপত্র রান্নাঘর থেকে সরিয়ে ফেলুন। ছিমছাম রাখার চেষ্টা করুন। সপ্তাহে একবার পুরো রান্নাঘর পরিপাটি করে নিন। রান্নাঘরে রাখা জিনিসপত্র পানি বা আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে নষ্ট হচ্ছে কি না খেয়াল রাখতে হবে। রান্নাঘরে বাড়তি পোকামাকড়ের উপদ্রব দূর করতে অনেকেই কীটনাশক ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে অনুমোদিত ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের দক্ষ লোকদের সহায়তা নিন।
কেবল বাসাবাড়িতে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। মসলা, চালের ড্রামসহ পণ্য রাখার পাত্রে নিমপাতা রাখতে পারেন। পোকামাকড় দূর হবে। প্রতিবার কাজ শেষে রান্নাঘরের কেবিনেট কাপড় দিয়ে মুছে রাখুন। মাছ-মাংস কোটা, ধোয়া ও রান্না শেষে ঘরের মেঝে পরিষ্কার করে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে নিন। সপ্তাহে দুইবার ফিনাইলজাতীয় তরল জীবাণুনাশক দিয়ে মেঝে মুছতে পারেন। রান্নাঘরে ময়লা জমিয়ে রাখা যাবে না। রান্নাঘরের বদ্ধ ও ঢাকনাযুক্ত জায়গাগুলো রোদেলা দিনে খুলে রাখতে পারেন। এতে ভাপসা গন্ধ দূর হবে। ধোঁয়ার কারণে রান্নাঘরে স্যাঁতসেঁতে ভাব জন্মাতে পারে। এ জন্য কিচেন হুড ব্যবহার করতে পারেন।
রান্নাঘরে স্নিগ্ধ ভাব আনতে সবুজ গাছ কিংবা ফুল রাখা যেতে পারে। দেয়ালের সঙ্গে ঝুলিয়ে দিতে পারেন কোনো লতানো গাছ। এগুলোরও নিয়মিত যত্ন নিন। এতে রান্নাঘরের পরিবেশ ভালো দেখাবে। মাঝেমধ্যে পুরো রান্নাঘর পরিষ্কার করে এয়ারফ্রেশনার ছড়িয়ে দিন।
রান্নাঘরে সবুজ গাছপালা রাখতে পারেন। এতে সব সময় একটা সতেজ ভাব বিরাজ করবে।