লালমনিরহাট প্রতিনিধি।
লালমনিহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার
অদম্য মেধাবী ও তুরস্ক প্রবাসী শিহাব আহমেদ ঈদুল আযহা উপলক্ষে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে প্রায় ৫শত পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে এক কেজি গরুর মাংস ও এক কেজি পোলার চাল তুলে দেন। মাংস ও চাল পেয়ে হতদরিদ্র মানুষরা খুবই খুশি। এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (১৭জুন) ঈদের দিন বিকেলে হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা রেলগেট সংলগ্ন বাড়িতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষদের মাঝে মাংস ও পোলার চাল তুলে দেয়া হয়।
শিহাব আহমেদ উপজেলার বড়খাতা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজের ছেলে।
জানা গেছে,শিহাব আহমেদ চার বছর বয়সে মা মারা যাওয়ার পর অভিভাবকশূন্য হয় শিহাব। এর পর মানুষের বাড়িতে খেয়ে পড়ে চলতে থাকে শিহাবের জীবন। নিজ প্রচেষ্টা কাজে লাগিয়ে তিনি এখন সফল উদ্যোক্তা। এক সময়ে সবজি বিক্রি, রিক্সা চালক, গার্মেন্টস কর্মী ও হোটেলে ডিশ ওয়াশার, জুতা পালিশ সহ শ্রমিকের কাজ করে লেখাপড়া চালিয়ে তিনি ‘দি অটোমান গ্রুপ’সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক বনে গেছেন।
২০১৬ সালে তুরস্কে স্কলারশিপ নিয়ে পড়ার সুযোগ পান তিনি। তুরস্ক গিয়ে পড়াশুনার পাশাপাশি নির্মাণ শ্রমিক, হোটেলে ডিশ ওয়াশার, জুতা পালিশসহ হকারি কাজ করেন। সেখানে শুরু করেন ক্ষুদ্র ব্যবসা।
এর পর শিহাব আহমেদের জীবন পাল্টে যায়। ২০২০ সালে শিহাব আহমেদ স্ত্রী, দুই সন্তানসহ তুরস্কের নাগরিকত্ব অর্জন করেন।
বড়খাতা পশ্চিম সাড়ডুবি গ্রামের সোলেমান আলী বলেন,তিনি বিদেশ থেকেই চিন্তা করেছেন ঈদে এলাকার গরিব মানুষের মুখে মাংস তুলে দেওয়ার জন্য। গরীব মানুষের কথা চিন্তা করে সবার হাতে এক কেজি গরুর মাংস ১ কেজি পোলার চাউল তুলে দেয় আমরা খুবই খুশি দোয়া করি তার জন্য।
মাংস ও পোলার চাউল পেয়ে ছকিমন বেওয়া বলেন, মুই খুব খুশি। ঈদের দিন গোস্তা খাবার পামো। এটা কোন দিন ভাবোং নাই। আল্লাহ তোমাক ভালো করবে।
বড় খাতা আদর্শ গ্রামের তোহিরন বেওয়া বলেন,আমরা গরীব অসহায় গুচ্ছগ্রামে থাকি। গোস্ত আর চাউল না পাইলে ঈদে মুখে উঠতো না। হামা দোয়া করি শিহাব ভাতিজা যেন আমার পাশে থাকে।
শিহাব আহমেদ বলেন,এক সময় আমি সবজি বিক্রেতা,রিক্সাচালক ছিলাম, গার্মেন্টসের কর্মী ছিলাম সেখান থেকে অতি কষ্টে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়ে তুরস্কের স্কলারশিপ পাই। সেখানে গিয়েও হোটেলে ডিশ ওয়াশার, জুতা পালিশ সহ শ্রমিকের কাজ করতাম। আমার চিন্তা-চেতনায় ছিল বড় হওয়ার লক্ষ্য। আজ আমি তুরস্ক বাংলাদেশ, দুবাইয়ের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।
তিন আরো বলেন, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে লভ্যাংশ টাকায় গরিব অসহায় মানুষের মাঝে দান করে থাকি। এই দান অব্যাহত থাকবে। সমাজের বিত্তবানরা যদি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায় তাহলে সমাজটা বদলে যেত।