রংপুর টাইমস :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের লালমনিরহাট-১ আসনে ভোটারদের ভয়ভীতি, আগামী ৭ তারিখে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ায় ভোটারদের হুমকি, ঈগল পাখির সমর্থকদের মারধর, নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও এজেন্টের হুমকিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন লালমনিরহাট ১ আসনের (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সোনালী ব্যাংকের এমডি আতাউর রহমান প্রধানে সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় ১৮টি দফার ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
আজ সোমবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হলে জনগণের জন্য ১৮টি বিষয় বাস্তবায়ন করার ঘোষণা করেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ-পরিকল্পনা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আতাউর রহমান প্রধান বলেন, ১৯৭৩ সাল থেকেই আমি ছাত্র রাজনীতি শুরু করি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দলীয় নমিনেশন চেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী একজনকে দলীয় প্রতীক নৌকা দিয়েছে। তিনি বলেছেন, যদি আমাদের জনপ্রিয়তা থাকে তাহলে আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করতে পারবো।
সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান আরো বলেন, একটি পক্ষ বিএনপিকে সাথে নিয়ে ভোটের দিন এবং ভোটের আগের দিন ভোট কেন্দ্রে ককটেল ফাটিয়ে লোকজনকে ভয় দেখাবে। আমি আশা করি এ নির্বাচনে সাধারণ মানুষ ঈগল প্রতীকে তাদের ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করবে।
নির্বাচনী ১৮ দফা ইশতেহারগুলো হলো- ১.বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের তত্বাবধানে শিল্পনির্ভর একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা। ২. আগামী পাঁচ বছরে ইউনিয়নভিত্তিক সমহারে সরকারি-বেসরকারি খাতে ৫০ হাজার এবং প্রবাসে ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান। ৩. বামতীরে বাঁধসহ তিস্তা মহাপরিকল্পণা বাস্তবায়নে উদ্যোগ এবং তিস্তা ব্যারেজকে কেন্দ্র করে আধুনিক ও সমৃদ্ধ একটি পর্যটনকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা। ৪.কৃষিজীবী মানুষের সার্বিক অবস্থার উন্নয়নে কৃষিঋণ সহজীকরণ এবং একটি বীজ সংরক্ষণাগার নির্মাণ। ৫.শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সমাজের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিতকরণ এবং রাজনৈতিক বিবেচনা পরিহার করে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে নন- এমপিও প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত এমপিও ভুক্তকরণ। ৬. এইচএসসি পাশের পর উচ্চশিক্ষা গ্রহণেচ্ছু ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর তালিকা প্রণয়ন এবং আবেদনসাপেক্ষে দরিদ্র শিক্ষার্থীগণের জন্য বেসরকারি বৃত্তির ব্যবস্থা। ৭.স্থানীয় ব্যবসায়ী, নারী ও নবীন উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি। ৮. হাতীবান্ধা উপজেলা শহরকে পৌরসভা এবং বুড়িমারী স্থলবন্দরকে দেশের প্রধানতম স্থলবন্দরে রূপায়ন। ৯. স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নসহ হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ২০০ শয্যায় উন্নীতকরণ। ১০. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ সংখ্যক ভাতা ও কার্ড নিশ্চিতকরণ এবং চরাঞ্চলের মানুষের জন্য মাস্টারপ্ল্যান। ১১. বিদ্যুতের লোডশেডিং শূন্যে নামিয়ে আনা এবং শিল্পকারখানার উপযোগী হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ। ১২.আঞ্চলিক সড়কগুলো সংস্কার এবং ঢাকা-রংপুর চার লেন মহাসড়ককে বুড়িমারীর সাথে সংযোগের কাজে গতিসঞ্চার। ১৩.ঢাকার সাথে সরাসরি যোগাযোগে এক্সপ্রেস রেলওয়ে সার্ভিস এবং ব্রডগেজ লাইন চালু।১৪.হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষণাবেক্ষণে বরাদ্দ। ১৫.খেলার মাঠে অর্থায়ন এবং দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ১৬.নিরপেক্ষতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সামাজিক বিপ্লব। ১৭.হাতীবান্ধা উপজেলায় একটি মিনি স্টেডিয়াম বাস্তবায়ন করা। ১৮.রংপুর এবং লালমনিরহাটের সাথে বাস যাতায়াতের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।