লালমনিরহাট প্রতিনিধি।।
লালমনিরহাটের আদিতমারীতে অটোচালক আব্দুর রাশিদ (৪০)কে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় চার আসামীকে গাজীপুরের কোনাবাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় আদিতমারী থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করতে থাকে।
এর আগে বুধবার (২৩ আগস্ট) রাতে তাদেরকে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আদিতমারীর খারুভাজ বালাপাড়া এলাকার মমিনুল ইসলাম ছেলে মোঃ সিরাজুল ইসলাম (১৬) মোন্তাজ আলী ছেলে মোঃ শামসুল হক বাবু (৩২), আব্দুল মতিন ছেলে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মুন্না (১৭), নাজিম উদ্দীন ছেলে মোঃ মোমিনুল ইসলাম (৪৫)।
এ ঘটনায় থানায় বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীর বড় ভাই আব্দুর রশিদ।
মামলা ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত ২০ আগস্ট প্রতিদিনের মতো অটোচালক আঃ রাশিদ তার ছোট ছেলের জন্য রাতের খাবার নিয়ে বাড়ি হতে বুড়িরবাজার মাদ্রাসায় ছোট ছেলেকে খাবার পৌঁছে দেয়। রাতে বাড়ি ফিরে না আসায় তার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া গেলে পরদিন আত্মীয়-স্বজন খোঁজা-খুঁজি করে। পরের দিন (২১ আগস্ট)সকাল সাড়ে দশটার দিকে স্বর্ণামতি নদী থেকে আঃ রাশিদ (৪০) এর মৃত দেহ উদ্ধার করে।
রংপুর র্যাব ১৩ জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, মূল পরিকল্পনাকারী সিরাজুল ইসলাম (১৬) এর পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক সহযোগী আসামীদের সহযোগীতায় ঘটনার দিন রাতে বুড়িরবাজার থেকে অটোরিকশা ভাড়া করে বাবুর বাজার যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে। পথিমধ্যে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ডাকাতপাড়া ব্রীজের উপর প্রসাব করার কথা বলে থামাতে বলে ছিনতায় এর উদ্দেশ্যে শামসুল হক ও মোস্তাফিজুর রহমান ধস্তাধস্তি শুরু করে। একপর্যায়ে সিরাজুল ইসলাম পিছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় সজোরে আঘাত করলে আঃ রাশিদ রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। টাকা পয়সা এবং অটো রিক্সা নিয়ে ভিকটিমকে অর্ধ-মৃত অবস্থায় ব্রীজের উপর থেকে পানিতে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে অটোরিকশা নিয়ে মোস্তাফি বাজারে ভাঙ্গারী দোকানে বিক্রি করতে গেলে দোকানদার বৈধ কাগজ চাওয়ায় তারা মোস্তাফি বাজারে অটো ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে তারা পালিয়ে গাজীপুর কোনাবাড়ী এলাকায় অবস্থানরত আসামী সিরাজুল ইসলামের বাবা মোমিনুল ইসলামের বাসায় আত্মগোপন করে এবং সেখান থেকেই তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে আসামীদের থানায় নিয়ে আসার ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে তার ছেলে-মেয়ে স্ত্রী পরিবার সহ শত শত এলাকাবাসী থানার সামসে এসে বিক্ষোভ শুরু করে।
এ সময় আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মোজাম্মেল হক হ্যান্ডমাইকে দ্রুত আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও হত্যার ঘটনায় অস্ত্র উদ্ধারের আশ্বাস দিলে তারা ফিরে যায়।
তিনি আরও বলেন, আগামীকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এঘটনার বিস্তারিত জানানো হবে।