জেলা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতায় বাঁশের বেড়া ভাঙতে নিষেধ করায় বৃদ্ধ শ্বশুর আবুল কাশেম (৭০) কে মারধর করে পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুত্রবধূ মজিয়া বেগমের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত শ্বশুর বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯অক্টোবর) দুপুরে গুরুতর আহত শ্বশুর হাসপাতালে বেডে শুয়ে ঢুকরে কাঁদছেন আহত বৃদ্ধ শ্বশুর আবুল কাশেম।
এঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বৃদ্ধ আবুল কাশেমের বড় ছেলে গোলজার রহমান রঞ্জু ছোট ভাই ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় অভিযোগ করেন।
এর আগে বুধবার বিকেলে উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামে এঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার বৃদ্ধ আবুল কাশেম (৭০) উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের মৃত জসমুদ্দিন পাইকারের ছেলে।
অভিযুক্ত গৃহবধূ মজিয়া বেগম (৩০) তার আপন ছোট ছেলে মঞ্জু মিয়ার স্ত্রী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃদ্ধ আবুল কাশেমের বড়ছেলে ও ছোট ছেলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
সেই জেরে গত বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে বাড়ির পাশে সুপারি বাগানে লাগানো বাঁশের বেড়া ভাঙতে শুরু করেন ছোট ছেলে মঞ্জু মিয়ার স্ত্রী মজিয়া বেগম। এসময় শ্বশুর নিষেধ করে এগিয়ে গেলে পুত্রবধূ মজিয়া বেগম তার শ্বশুর আবুল কাশেমের উপর চড়াও হন। হাতে থাকা বাঁশের ফালাটি দিয়ে গায়ে আঘাত করে পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে বাড়ি চলে যান।
এসময় বৃদ্ধ আবুল কাশেমের চিৎকারে স্থানীয়রা তাকে পুকুর থেকে তুলে আহত অবস্থায় হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
প্রত্যক্ষদর্শী সহিদার রহমান বলেন, শ্বশুরের সাথে উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে বলতে হঠাৎ মজিয়া বেগম তার শ্বশুরকে মারধর করে পুকুরে ফেলে দেন। পরে আমরা তাকে পুকুর থেকে তুলে আনি।
আহত বৃদ্ধ আবুল কাশেম বলেন, আমার সুপারি বাগানের বাঁশের বেড়া ভাঙছিল আমার ছেলের বউ মজিয়া। তাকে আমি নিষেধ করে এগিয়ে গেলে সে আমাকে মারধর করে পাশের পুকুরে ফেলে দেয় পরে আমি পানিতে হাবুডুবু খাওয়ার সময় স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমি সমাজের কাছে আমার ছেলের বউয়ের বিচার চাই।
অভিযুক্ত ছোট ছেলে মঞ্জু মিয়া বলেন, আমার স্ত্রী মজিয়া বাবাকে মারধর করেনি, সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। বাঁশের বেড়ায় ছাগলের দড়ি আটকে ছিল সেটি খুলতে গিয়ে বাবা দেখে ফেলে। পরে বাবাই বলে যে বাঁশের বেড়া ভাঙছ কেন। পরে ছাগলের দড়ি লাগিয়ে বাবা পুকুরে পড়ে যায়।
বৃদ্ধ আবুল কাশেমের বড় ছেলে গোলজার রহমান রঞ্জু বলেন, আমার অনুপস্থিতিতে ছোটভাইয়ের স্ত্রীকে সুপারি বাগানের বেড়া ভাঙ্গা নিষেধ করায় বাবাকে মারধর করে হত্যার উদ্দেশ্যে পুকুরে ফেলে দেয়। এ বিষয়ে সুষ্ঠু বিচার চেয়ে থানা একটি অভিযোগ করছি।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহা আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।