মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০০ পূর্বাহ্ন

লালমনিরহাটের  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সুজনের ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে বিজিবির আর্থিক সহায়তা প্রদান

লালমনিরহাটের  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সুজনের ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে বিজিবির আর্থিক সহায়তা প্রদান

প্রতিনিধি, পাটগ্রাম, লালমনিরহাট:
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত সুজন ইসলামের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বর্ডার গাড বাংলাদেশের (বিজিবি) তিস্তা-২ ব্যাটালিয়ন (৬১ বিজিবি)।

বৃহস্পতিবার বিকেলে লালমনিরহাটে হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামের ৩ নং ওয়ার্ডের বাড়িতে তার শারীরিক প্রতিবন্ধী বাবা হাতে আর্থিক সহায়তা হিসেবে একটি ব্যাটারী চালিত ভ্যানগাড়ি, খাদ্য সামগ্রী ও হাঁস-মুরগী হাতে তুলে দেন বিজিবি কর্তৃপক্ষ। তাছাড়াও একই ইউনিয়নের বুড়াসারডুবি এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ সংখ্যালঘু ১৭টি পরিবারের মধ্যে গৃহনির্মাণ সামগ্রী, খাদ্য সামগ্রী, শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা সহায়ক সামগ্রী (স্কুল ব্যাগ, খাতা, কলম, পেন্সিল, পেন্সিল বক্স সেট ইত্যাদি) প্রদান করা হয়।

এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মামুনূর রশীদ, পিএসসি। আরও উপস্থিত ছিলেন তিস্তা ব্যাটালিয়ন (৬১ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল শেখ মোহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম, পিএসসি সহ বিজিবি’র অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্ধ।

এইএসসি পাশ করে লেখাপড়া ও সংসারে হাল ধরতে ঢাকার আশুলিয়া জিরাবো এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন সুজন হোসেন (২৩)। তাঁর আয়েই সংসার চলছিল। বড় হয়েছে তাঁর ভাইবোনেরা। তবে বৃদ্ধ মা-বাবা ও ছোট বোনদের সংসারে সব সময় সহায়তা করেছেন। তাঁর এই অকালমৃত্যুতে পরিবারের সবাই অকূল পাথারে পড়েছেন। তাঁদের এখন একটাই চিন্তা, সংসার চলবে কীভাবে?

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সেই দিন ৫ আগস্ট দুপুরে ঢাকা সাভারে ছাত্রদের মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে মাথা গুলিবৃদ্ধ হয়ে নিহত হন সুজন হোসেন । এরপর থেকে সুজন ইসলামের ফোন বন্ধ পাওয়া স্বজনরা । পরে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতাল খোঁজার পর মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার লাশের সন্ধান পান তার প্রতিবেশি মোস্তফা মিয়া। এরপর ৬ আগস্ট সন্ধ্যার নিজ গ্রামের বাড়িতে তার লাশ দাফন করা হয়।

 

 

নিহত সুজনের বাড়ি লালমনিরহাটে হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামের ৩ নং ওয়ার্ডে। তার বাবা নাম শহিদুল ইসলাম ও মা রেজিয়া বেগম। তাদের একমাত্র সন্তান ছিল সুজন । সে একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে সন্তানকে হারিয়ে বাবা-মা পাগল প্রায়। সুজন হোসেনের চার বোন। চার বোনের বিয়ে হলেও সবার ছোট বোন পাকিজা খাতুনের যৌতুকের ৮০ হাজার টাকা বাকি থাকার দুই মাস পুর্বে স্ত্রী ও শিশুসন্তানকে শ্বশুর বাড়িতে রেখে যান স্বামী রানা মিয়া । ছোট বোনের পাওনা ৮০ হাজার টাকা চাকরি করে পরিশোধ করার কথা ছিল সুজনের। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ঢাকা থেকে ভাইয়ের লাশ ফিরে এলো।

 

 

নিহত সুজনদের জমি জায়গা বলতে কিছুই নেই মাত্র চারশতাংশ জমির উপর বাড়ি ভিটা। সেই জমির পাশেই সুজনকে দাফন করা হয়েছে।
তবে বিজিবির সূত্রটি জানান, স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক বিজিবি এমন সহায়তা অতীতের ন্যায় আগামীতেও অব্যাহত থাকবে মর্মে প্রধান অতিথি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি সীমান্তে যে কোন কার্যক্রমে বিজিবিকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তথ্য প্রদানে সকলের সহযোগিতা কমনা করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024 Rangpurtimes24.Com
Developed BY Rafi IT