লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি আবারও বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে লালমনিরহাটের ৫ টি উপজেলার নদী তীরবর্তী চর অঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আজ শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)।
এর আগে সকাল ৬টায় ব্যারজ পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানির পরি মাপ কর্মচারী নুরুল ইসলাম বলেন, সকাল ৬টায়৷ তিস্তার পানি বিপদসীমা ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে উজান থেকে কি পরিমান পানি আসছে বলা যাচ্ছে না।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম তিস্তার পানি বিপদসীমার ৭ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিস্তায় পানি বৃদ্ধিতে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। চর অঞ্চল মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই রান্না করতে না পেরে শুকনা খাবার খেয়ে আছেন। এদিকে পানির নিচের তোলি গেছে আমন ক্ষেত। পাশাপাশি গবাদি পশু পাখি নিয়ে বিপদে আছেন নদী পাড়ের মানুষ। অপর দিকে পানির নিছে তলিয়ে পড়ছে মৌসুমী ফসল ধান ও শাক-সবজী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার রাজপুর,খুনিয়াগাছ বাগডোরা, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।
তিস্তা পাড়ের আয়নাল হক বলেন,ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় ঘর থেকে বেড়াতে পারছিনা। এদিকে গরু-ছাগল নিয়ে খুব কষ্টে আছি।
হাতীবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী মারির আলিয়া বেগম বলেন,তিস্তার পানি পারলে আমাদের রান্নাবান্নার কষ্ট হয় অনেক সময় আমরা না খেয়েও থাকি।
গড্ডিমারি ইউনিয়নের নিজ গড্ডিমারী গ্রামের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন,গতকাল থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে অত্র ইউনিয়নের পাঁচটি ওয়ার্ডে পানি প্রবেশ করেছে। চর অঞ্চলের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় অনেকেই ঘর থেকে বেরোতে না পেরে কষ্টে দিন পার করছেন।
হাতীবান্ধার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন,গতকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে অত্র ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বন্দি পরিবারগুলো ভোগান্তিতে পড়েছেন।