লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ৬ বার খাসি কোরবানি দেওয়া তিস্তাপাড়ের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কৃষক মোজাম্মেল হক আকন্দ (৬৮) মারা গেছেন। তিনি উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের নিজ গড্ডিমারী গ্রামের মৃত কেরামত আলী আকন্দের ছেলে।
শনিবার (০১ জুলাই) ভোরে দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর গড্ডিমারী ইউনিয়নের নিজ গড্ডিমারী গ্রামে ইন্তেকাল করেন। তার বড় ছেলে মিঠু মিয়া তার বাবা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালে তিস্তা নদীর ভাঙনে জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন মোজাম্মেল। কোনো উপায় না পেয়ে সাহায্যের আবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। পরে প্রধানমন্ত্রী তাকে ২০ হাজার টাকা অনুদান দেন। অনুদানের ১৭ হাজার টাকায় ঘর-বাড়ি মেরামত করেন তিনি। বাকি ৩ হাজার টাকা দিয়ে একটি ছাগল কেনেন। সেই ছাগল থেকে প্রতি বছরই ছাগলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় । সেই থেকে প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে একটি করে ছাগল কোরবানি দিয়ে আসছিলেন তিনি।
মোজাম্মেল হক আকন্দের বড় ছেলে মিঠু মিয়া বলেন, বাবা প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে খাসি কোরবানি দিতেন। বাবা দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর আজ ভোরে মারা যায়। বাবার ইচ্ছে ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একবার স্বচক্ষে দেখার। কিন্তু বাবার সেই ইচ্ছে পূরন হল না।
গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জাকির হোসেন বলেন, তিস্তা নদীতে জায়গা জমি ভেঙ্গে যাওয়ায় মোজাম্মেল হক অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। তার একটি মেয়ে এমএ পাস, তার চাকুরি নিয়ে দিতে পারেনি । তিনি এবার অসুস্থ থাকার কারনে কোরবানি দিতে পানেনি।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, আওয়ামীলীগের নিবেদিত প্রাণ ছিলেন তিস্তাপাড়ের মোজাম্মেল হক। প্রতিবছর তিনি প্রধানমন্ত্রীর নামে খাসি কোরবানি দেওয়ার সময় আমাকে বলতেন। মোজাম্মেল হক গত ছয় বছর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটি করে ছাগল কোরবানি দিয়ে আসছেন। আমরা তার মৃত্যুতে শোকাহত।
এম.এফ/রংপুর টাইমস