লালমনিরহাট প্রতিনিধি।।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার রসুলগঞ্জ হাট বাজারের সরকারি জায়গার নির্মিত দোকানঘর পৌর মেয়রের নির্দেশে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠেছে।
এতে ৫০ টি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নিরুপায় হয়ে পড়ে। বর্তমানে দোকান খুলতে না পেরে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সমস্যা সমাধানে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও),জেলা প্রশাসক,রংপুর বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন।
স্থানীয় দোকানদারদের অভিযোগ, পাটগ্রাম পৌর মেয়র রাশেদুল ইসলাম সুইট কোনো পূর্ব ঘোষণা বা নোটিশ না দিয়ে গত ২৫ আগস্ট এক সপ্তাহের মধ্যে দোকান সরানোর নির্দেশ দেন। গত ১ ও ২ সেপ্টেম্বর উপজেলার পূর্ব বাজার এলাকার গ্রোথ সেন্টার মাল্টিপারপাস তিনটি শেড হতে টিন খুলে নিয়ে যায় পৌরসভার কর্মীরা। এতে প্রায় ৫০ টি বিভিন্ন ধরণের ক্ষুদ্র দোকানের মালিকেরা নিরুপায় হয়ে পড়ে। বর্তমানে দোকানপাট করতে না পেরে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি সায়রাত মহালের রসুলগঞ্জ হাট পূর্ব বাজার এলাকার উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর গত ২০০১-২০০২ অর্থ বছরে ২৬,৬৯,১৯৪ টাকা ব্যয়ে এ বাজারের মাল্টিপারপাস শেড গুলো নির্মাণ করে। ওই সময় হতে বাজারের এ জায়গার কয়েক শত দোকানদার প্রতিবছর পাটগ্রাম পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে ও নিয়মিত ইজারা মাশুল (টোল) দিয়ে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
পূর্ব বাজার এলাকার মাল্টিপারপাস শেডের মুদি দোকানদার আরমান হোসেন, সুবল চন্দ্র দেবনাথ ও মসলা ব্যবসায়ী দীলিপ চন্দ্র বলেন, ‘গত ২৫ আগস্ট মেয়র সাহেব আমাদেরকে ডেকে ১ সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়ে দোকান সরাতে বলে। না হলে মাল সরানোর কোনো সময় দেওয়া হবে না বলে জানায়। গত ১ সেপ্টেম্বর তিনটি শেডের টিন প্রায় ৩০ জন লোক দিয়ে মূহুর্তেই খুলে ফেলা হয়। আমরা নিরুপায় হয়ে পড়ি। ৫ তলা ভবনের ভিত্তি দিয়ে ২ তলা নির্মাণ করে আমাদেরকে দোকান ঘর দিবেন বলে দোকান ভাঙ্গতে বলেন তিনি (মেয়র)। দোকান না করলে পরিবার নিয়ে বাঁচবো কি করে, খাবো কি এজন্য পূর্বের স্থানে দোকানপাট করতে জেলা প্রশাসক মহোদয় ও ইউএনও স্যারকে দরখাস্ত দিয়েছি। ’
ওই বাজারের আনারুল হক বলেন,দোকান করে আমার সংসার এবং ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা চলে আজ কয়েকদিন ধরে দোকান বন্ধ। বাহিরে কামলা দিতেও পারি না। সমাধানের জন্য ইউএনও ও ডিসি স্যারকে আবেদন করেছি।
এ ব্যাপারে পূর্ব বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ইবাদুজ্জামান বাপি বলেন, ‘ক্ষুদ্র এসব ব্যবসায়ী শুধুমাত্র দোকানের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর পরিবার নিয়ে নির্ভরশীল। মেয়র সাহেব আমাদেরকে কোনো জানান নি । আমরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয় গুলো জানিয়েছি।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম পৌরসভার মেয়র রাশেদুল ইসলাম সুইট বলেন,আমি কাউকে নির্দেশ দেননি তাদেরকে নিয়ে মিটিং করেছি।
উচ্ছেদের বিষয় নয়। তারা তাদের জায়গায় থাকবেন। বাজার সেটের টিন পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য তারা মালামাল সরিয়ে নিবেন। এটির সংস্কার করার দায়িত্ব আমার। গ্রোথ সেন্টার মাল্টিপারপাস সেড বাজার উচ্ছেদের জন্য আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে আবেদন করছি।
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলাম বলেন, ওই বাজারের কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আমাকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই বাজারটি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিয়ন্ত্রণে। ওই বাজারটি খাস খতিয়ানের। উচ্ছেদের বিষয় আসলে আমরাই এটি করবো। অন্য কারো এখতিয়ার এখানে নেই। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।