শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন

ডিমলায় ভিজিএফ কার্ডের চাল কম দেওয়ার অভিযোগ

ডিমলায় ভিজিএফ কার্ডের চাল কম দেওয়ার অভিযোগ

জামান মৃধা, ডিমলা (নীলফামারী)

নীলফামারী ডিমলা উপজেলায় দুই ইউনিয়ন পরিষদে হতদরিদ্র ও দুস্থ জনগোষ্ঠীর সহায়তা কর্মসূচীর (ভিজিএফ) কার্ডের স্লিপ প্রতি ১-২ কেজি চাল কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন দুটি হলো খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন। প্রতিবাদ করলেও মেলেনি চাল।

 

বুধবার (৩রা এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের হলরুম থেকে চাল বিতরণ করছে ইউপি সদস্যরা।

 

 

এমন সময় একব্যক্তি এসে অভিযোগ দেওয়ায় জনৈক একব্যক্তি ক্যামেরাম্যান ও ওই ব্যক্তির উপর ক্ষিপ্ত হন। পরে জানা গেছে তিনি খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামানের ক্যাডার বাহিনীর প্রধান সদস্য আব্দুর রশিদ। তাদের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সকল অপরাধ সংগঠিত করে থাকে। হলরুম থেকে বাহির হওয়ার পরেই দুইজন কার্ডধারীর চাল মিটারে ওজন দিলে ২০ কেজি চালের বিপরীতে ১৮ কেজি ১২০ গ্রাম চাল পাওয়া যায়। ৪ জনের আরেকটি বস্তা পরিমাপ করলে ৩৭ কেজি ৩৫০গ্রাম চাল পাওয়া যায়। অথচ থাকার কথা ৪০ কেজি।

 

 

 

এই দৃশ্য দেখে চেয়ারম্যানের আরেক সহযোগী মিজানুর রহমান এসে মিটার ওয়ালাকে বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তিনি বলেন, কেজি প্রতি এক কেজি কম দিয়েছি তাতে সমস্যা কি? এটা তো থাকবেই! উপজেলা প্রশাসন জানেন! ট্যাগ অফিসার জানেন! আসেন বসি, আলোচনা করি! কথা আছে, কথা না বলেই সমস্যা করছেন আপনারা।

 

 

খালিশা চাপানী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে বাসিন্দা ওমর আলী জানান, আমি ২টা স্লিপের চাল তুলেছি। দুই স্লিপে ২০ কেজি হওয়ার কথা কিন্তু ১৮ কেজি চাল পেয়েছি। সে বিষয়ে বলতে গেলে চেয়ারম্যানের সহযোগী নজরুল ইসলাম আমাকে ধমক দেয়। ভয়ে আমি কিছু বলতে পারিনি।

 

 

বেলাল নামের আরেকজন বলেন, এখন তো ১ কেজি কম দিয়েছে সকালের দিকে কার্ড প্রতি দেড়কেজি থেকে ২ কেজি কম দিয়েছিল। পরে ইউএনও আসার পরও ১ কেজি করে কম দিয়েছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, সকাল বেলায় ইউপি সদস্যদের স্লিপ বিক্রির হিড়িক পড়েছিল। স্লিপধারীর সবাইকে চাল কম দিচ্ছে, অথচ ওখানে একজন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন। তিনি সব দেখেও না দেখার ভান করেন।

 

 

ভিজিএফ এর চাল কম দেওয়া কারণ জানতে চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাত করতে চাইলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোন ফোন দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

 

 

অন্যদিকে ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় চাল ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ লাইন। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও উপহারভোগীদের কাছে থেকে স্লিপ ক্রয়ের মাধ্যমে লাইনে দাড়িয়েছেন। তারপরেও প্রতি স্লিপের বিপরীতে ৮ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এ বিষেয় ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একরামুল হক চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ২ হাজার টাকা বাহির করে বলেন টাকা টা নেন তেল খরচের জন্য। সবাই আসতেছে আর নিয়ে যাচ্ছে। আপনিও নেন। আর আমি তো ইউপি সদস্যদের মধ্যে চাল ভাগ করে দিয়েছি। যে চাল কম দিয়েছে উনি ২নং ওয়ার্ডের সদস্য। মেম্বার কাজটি ঠিক করেনি।

 

 

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ছালমাকে অবগত করলে তিনি বলেন, চাল কম দেওয়ার বিষয়ে ফোন দিয়ে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে, আমি কয়েক জায়গা পরিদর্শনে গিয়েছি। কোথাও কোনো অভিযোগ বা অনিয়ম পাওয়া যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024 Rangpurtimes24.Com
Developed BY Rafi IT